রাজশাহী মহানগর হতে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে নূর মোহাম্মদ এর বাড়ি। পিতা- মৃত আজির উল্লাহ, গ্রাম-গোল্লাপাড়া, উপজেলা- তানোর, জেলা- রাজশাহী, ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি তার দারুন উৎসাহ ছিল। অভাব অনাটনের পরিবারে খুব বেশী লেখাপড়া করতে পারেনি। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ধান নিয়ে তাঁর স্বতন্ত্র চাষাবাদ। বাবার সংগে কৃষি কাজ করা শুরু করেন নূর মোহাম্মদ। বাবা যখন জমিতে ধান রোপণ করতেন তখন নূরমোহাম্মদ জমির কোনাই নিজের মত করে ধান রোপণ করে পরিচর্যা করতেন। আশা ছিল কৃষি কাজ করে বড় কিছু একটা করবেন তিনি। তার ধারাবাহিকতায় স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন ও অফিসের সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন। যে কোন নতুন জাতের ধান পেলে উৎসাহের সাথে মনোনিবেশ করে আবাদ করতেন। এভাবে উপজেলা কৃষি অফিসার ও উপসহকারী কৃষি অফিসারে সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে তার। কৃষি অফিসের সহায়তায় বিভিন্ন নতুন নতুন জাত নূর মোহাম্মদ তাঁর জমিতে আবাদ করে পর্যবেক্ষণ করতেন। এরপর তিনি নিজের উদ্যোগে নতুন নতুন জাতের ধান গবেষণা থেকে সংগ্রহ ও উৎপাদন করে ভাল ফলন পেয়ে এলাকায় সাড়া ফেলেন।
রাজশাহী ধান গবেষণা সহায়তায় নূর মোহাম্মদ গবেষণার কার্যক্রম শুরু করেন। সংকরায়ন ও নির্বাচন মাধ্যমে নতুন জাত উদ্ভাবন করে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর স্বীকৃতি হিসাবে ২০০৫ সালে তিনি কৃষিতে স্বর্ণ পদক লাভ করেন। স্বর্ণ পদক পাওয়ার পর নূর মোহাম্মদ আরোও উৎজীবিত হয়ে বিভিন্ন ধানের জাত সংরক্ষণ করতে থাকেন। এই পর্যন্ত তার নিকট উফশি ও স্থায়ীয় মিলে প্রায় ৯৮টি ধানের জাত রয়েছে বলে তিনি জানান। তাঁর ফার্মের নাম নূর মোহাম্মদ কৃষি পরিসেবা। কৃষি কাজকে সব চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে গবেষণা ও কৃষি কার্যক্রম করতে থাকেন। আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে বীজ উৎপাদন করে সেই বীজ সাধারন কৃষকদের মাঝে বিক্রয় করে সুনাম অর্জন করেন। সর্বশেষ নূরমোহাম্মাদ কৃষি কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলা ১৪২১ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক ব্রোঞ্জ মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর হাতে তুলে দেন।
কৃষক নূর মোহাম্মাদের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার তানোর কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁকে সব সময় কৃষির নতুন নতুন আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সবসবময় উৎসাহি থাকে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা তাঁর প্রতি সব সময থাকবে। তিনি আশা করেন, তাঁর মতো উৎসাহি কৃষক অবশ্যই দেশ ও দশের উপকার করতে পারবে।